ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। এর শিক্ষা শুধু ইবাদত বা ব্যক্তিগত জীবনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনাসহ সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রকে আলোকিত করে। ইসলামী হুকুমত এমন একটি শাসনব্যবস্থা, যেখানে আল্লাহর বিধানই চূড়ান্ত, এবং কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।
ইসলামী হুকুমত বলতে এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব আল্লাহর, এবং রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহর আলোকে সমাজ পরিচালিত হয়। শাসকগণ জনগণের আমানতদার হিসেবে কাজ করেন এবং ইনসাফ, শূরা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।
ইসলামী হুকুমতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে। আইন প্রণয়ন, বিচার ও শাসন—all কিছুর ভিত্তি আল্লাহর বিধান।
📖 “ফয়সালার অধিকার একমাত্র আল্লাহর।”
(সূরা ইউসুফ: ৪০)
কোনো শাসন ইসলামী হতে পারে না যদি তা রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ না করে।
📖 “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য করো, এবং তোমাদের মধ্যে যারা নেতৃত্বে আছে তাদেরও...”
(সূরা নিসা: ৫৯)
ইসলামী শাসনব্যবস্থায় শাসন ব্যক্তির ইচ্ছাধীন নয়, বরং পরামর্শভিত্তিক হয়।
📖 “তাদের কার্যাবলি পরস্পরের পরামর্শে নির্ধারিত হয়।”
(সূরা আশ-শূরা: ৩৮)
ন্যায় প্রতিষ্ঠা ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব।
📖 “তোমরা ইনসাফের জন্য দৃঢ়ভাবে দাঁড়াও... যদিও তা তোমাদের নিজের বা আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধেও হয়।”
(সূরা নিসা: ১৩৫)
শাসক জনগণের প্রতিনিধি ও আমানতদার। কোনো স্বেচ্ছাচার ইসলামে অনুমোদিত নয়।
📖 “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ দেন যাতে তোমরা আমানত তাদের নিকট পৌঁছে দাও, যারা তার যোগ্য।”
(সূরা নিসা: ৫৮)
📘 “তোমাদের প্রত্যেকেই একজন দায়িত্বশীল, এবং প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের ব্যাপারে জবাবদিহি করবে।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস: ৮৯৩ | সহীহ মুসলিম: ১৮২৯)
আল্লাহর বিধান বাস্তবায়ন করা
মানবতার কল্যাণ সাধন
ইনসাফ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা
দুর্নীতি, জুলুম ও বৈষম্য দূরীকরণ
জনস্বার্থ রক্ষা করা
খিলাফতে রাশেদার শাসন (আবু বকর, উমর, উসমান, আলী রা.) ইসলামী হুকুমতের প্রকৃত রূপ। উমর (রা.)-এর বিখ্যাত উক্তি:
“ইউফ্রাত নদীর তীরে একটি কুকুরও যদি না খেয়ে মরে, তবে তার জবাবদিহিতাও আমি করব।”
এ কথার মধ্যে ইসলামী শাসনের দায়বদ্ধতার চিত্র প্রতিফলিত হয়।
📘 “সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ তাঁর আরশের ছায়া দেবেন, তাদের মধ্যে একজন হলেন ন্যায়পরায়ণ শাসক।”
(সহীহ বুখারী: ৬৬০, সহীহ মুসলিম: ১০৩১)
📘 “সর্বোত্তম জিহাদ হলো—একজন জালিম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।”
(সুনান আবু দাউদ: ৪৩৪৪)
ইসলামী হুকুমত নিছক একটি রাজনৈতিক কাঠামো নয়; বরং এটি একটি নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক ব্যবস্থাপনা। এখানে ব্যক্তির অধিকার, সমাজের স্থিতিশীলতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি—সব একত্রে বিবেচিত হয়। বর্তমান বিশ্বে শোষণমুক্ত, ইনসাফভিত্তিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার জন্য ইসলামী হুকুমতের নীতিমালা আমাদের জন্য একমাত্র নির্ভরযোগ্য পথপ্রদর্শক।
কোনো তথ্য ভুল মনে হলে সংশোধন করে দেয়ার অনুরোধ অনুরোধ রইল।
হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বর: 01751429519 (শুধু টেক্স করার অনুরোধ রইল)