১০:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২১ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে চায় জামায়াত: ডিএমপির কাছে অনুমতির আবেদন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • ১০২০ Time View

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পতনের পর রাজধানী ঢাকায় প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে জনসভা করতে চায় দলটি। আগামী ২১ জুন (শনিবার) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা আয়োজনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)-র কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতির জন্য আবেদন করেছে জামায়াত।

এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি জানান, “২১ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমাদের জনসভা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ উদ্দেশ্যে আমরা ডিএমপির কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করেছি। প্রস্তুতির কাজও শুরু হয়েছে।”

আসছে শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি, আমন্ত্রণ জানানো হবে সমমনা দলগুলোকে
এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, এই সমাবেশে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে। উদ্যান বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে চূড়ান্ত প্রস্তুতির বিষয়গুলো পরবর্তীতে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের অগ্রসরতা ,উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে রাজনৈতিক বাস্তবতায় নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঢাকায় একাধিক সমাবেশ করলেও, জামায়াতকে রাজধানীতে বড় কোনো সমাবেশে দেখা যায়নি।

তবে, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এ টি এম আজহারুল ইসলাম-এর মুক্তির দাবিতে জামায়াত পল্টনে একাধিক কর্মসূচি পালন করে। সর্বশেষ, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিল বিভাগ থেকে খালাস পাওয়ার পর আজহারুল ইসলামের তাৎক্ষণিক মুক্তির প্রেক্ষিতে জামায়াত শাহবাগ মোড়ে সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে।

অনেক বিশ্লেষকের মতে, জামায়াতের এই জনসভা আয়োজনের প্রচেষ্টা দলটির একটি রাজনৈতিক পুনঃউত্থানের কৌশল হতে পারে। শীর্ষ নেতার মুক্তি, রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতি, ও সরকারি কাঠামোয় শূন্যতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চাইছে দলটি। বিশেষত, তাদের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আগামী দিনে রাজনৈতিক অঙ্গনে জামায়াত একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এখনো পর্যন্ত ডিএমপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতির বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, তারা অনুমতি না পেলেও বিকল্প স্থান বা পদ্ধতিতে সমাবেশ আয়োজনের কথা ভাবছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই উদ্যোগ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনের একটি নতুন গতি নির্দেশ করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো প্রতীকী ও ঐতিহাসিক স্থানে জনসভার পরিকল্পনা নিঃসন্দেহে একটি রাজনৈতিক বার্তা বহন করে, যা পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

জনসভার অনুমতি, অংশগ্রহণকারী দল ও নেতাদের তালিকা এবং সরকারের অবস্থান—সব মিলিয়ে ২১ জুনের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ।

সম্পাদক : আলেমা আফরোজা খাতুন
বার্তা সম্পাদক ও প্রকাশক : মোছাঃ সমাপ্তি আক্তার

যোগাযোগ: ভূরুঙ্গামারী , কুড়িগ্রাম
মোবাইল: 01719-417006 / 01714-625816

© 2025 দৈনিক বাংলার জনপদ। সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

About Author Information

দিনাজপুরে বিভিন্ন আয়োজনে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালিত

২১ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে চায় জামায়াত: ডিএমপির কাছে অনুমতির আবেদন

Update Time : ০৮:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পতনের পর রাজধানী ঢাকায় প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে জনসভা করতে চায় দলটি। আগামী ২১ জুন (শনিবার) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা আয়োজনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)-র কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতির জন্য আবেদন করেছে জামায়াত।

এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি জানান, “২১ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমাদের জনসভা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ উদ্দেশ্যে আমরা ডিএমপির কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করেছি। প্রস্তুতির কাজও শুরু হয়েছে।”

আসছে শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি, আমন্ত্রণ জানানো হবে সমমনা দলগুলোকে
এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, এই সমাবেশে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে। উদ্যান বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে চূড়ান্ত প্রস্তুতির বিষয়গুলো পরবর্তীতে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের অগ্রসরতা ,উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে রাজনৈতিক বাস্তবতায় নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঢাকায় একাধিক সমাবেশ করলেও, জামায়াতকে রাজধানীতে বড় কোনো সমাবেশে দেখা যায়নি।

তবে, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এ টি এম আজহারুল ইসলাম-এর মুক্তির দাবিতে জামায়াত পল্টনে একাধিক কর্মসূচি পালন করে। সর্বশেষ, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিল বিভাগ থেকে খালাস পাওয়ার পর আজহারুল ইসলামের তাৎক্ষণিক মুক্তির প্রেক্ষিতে জামায়াত শাহবাগ মোড়ে সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে।

অনেক বিশ্লেষকের মতে, জামায়াতের এই জনসভা আয়োজনের প্রচেষ্টা দলটির একটি রাজনৈতিক পুনঃউত্থানের কৌশল হতে পারে। শীর্ষ নেতার মুক্তি, রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতি, ও সরকারি কাঠামোয় শূন্যতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চাইছে দলটি। বিশেষত, তাদের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আগামী দিনে রাজনৈতিক অঙ্গনে জামায়াত একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এখনো পর্যন্ত ডিএমপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতির বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, তারা অনুমতি না পেলেও বিকল্প স্থান বা পদ্ধতিতে সমাবেশ আয়োজনের কথা ভাবছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই উদ্যোগ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনের একটি নতুন গতি নির্দেশ করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো প্রতীকী ও ঐতিহাসিক স্থানে জনসভার পরিকল্পনা নিঃসন্দেহে একটি রাজনৈতিক বার্তা বহন করে, যা পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

জনসভার অনুমতি, অংশগ্রহণকারী দল ও নেতাদের তালিকা এবং সরকারের অবস্থান—সব মিলিয়ে ২১ জুনের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ।